রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:২৬ অপরাহ্ন
খলিলুর রহমান খলিল- নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
রংপুর জেলার তারাগঞ্জ থানার বিশেষ অভিযানে কুর্শা ইউনিয়নের ঘনিরামপুর মৌজার হারিকাটা এলাকা থেকে বিদেশি জাল নোটসহ থাই লটারির ২ প্রতারক গ্রেফতার হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়- গতকাল বুধবার ভোর ৫টার সময় হারিকাটা এলাকা থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমানের নির্দেশে এসআই ত্বহাকুল ইসলামের নেতৃত্বে, এসআই আমিনুল ইসলাম ও এএসআই সাইফুল ইসলাম সঙ্গিয় অফিসার ফোর্স ওই দুই প্রতারকে গ্রেফতার করে ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ঘনিরামপুর হারিকাটা এলাকার অবিনাশ রায়ের ছেলে গুণধর রায়(২১) ও একই এলাকার উপেন্দ্র রায়ের ছেলে কনক রায়(২২)।
এ সময় থাই লটারি খেলায় ব্যবহৃত থাইল্যান্ডের জাল মুদ্রা ৮০টি ১ হাজার টাকার নোট (বাথ) উদ্ধার করা হয় ।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে ২৫ এর এ (বি) ধারায় মামলা রুজু করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এস আই ত্বহাকুল ইসলাম বলেন- থাই অনলাইনভিত্তিক জুয়া। মূলত এগুলো এক ধরনের লটারি। যারা এই জুয়া খেলে তারা বিভিন্ন প্রকার লটারির টিকিট তৈরি করে কম্পিউটার থেকে প্রিন্ট করে। এই টিকিটগুলোতে বিভিন্ন প্রকার নম্বর থাকে যেগুলোর ওপর বাজি ধরতে হয়। নম্বরের সঙ্গে মিলে গেলে টাকা বিকাশ বা ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠাতে ও তুলতে হয়।
বেশির ভাগ সময় নম্বর দেওয়ার আগে প্রতারকরা অগ্রিম টাকা বিকাশের মাধ্যমে নিয়ে নেয়। পরে টাকা হাতে এলে ফোন বন্ধ করে দেয়। এভাবে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে নম্বর দেওয়ার কথা বলে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এই চক্রের সদস্যরা।
থানাপাড়া এলাকার শরিফুল ইসলাম জানান- প্রতারকরা বিভিন্ন প্রকার লটারির টিকিট বানিয়ে থাইল্যান্ডের লটারি বলে চালিয়ে দেয়। এদের বেশির ভাগ ক্রেতা বা খেলোয়াড় হচ্ছে বাইরের দেশের। তারা জুয়ায় অংশ নিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ইমো ও ফেসবুকের মেসেঞ্জারকে বেছে নেয়।
চোখের সামনে একটি প্রজন্ম জুয়ায় ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। তাদের কারণে অনেক প্রবাসী পরিবার নিঃস্ব হচ্ছে অথচ আমরা কিছু করতে পারছি না। এ ব্যাপারে তিনি স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তারাগঞ্জে অনলাইন জুয়ার ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে। আমরা এর বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযানেও নামছি। শুধু পুলিশি অভিযানে এ জুয়া প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। এজন্য এলাকাভিত্তিক সামাজিক প্রতিরোধও প্রয়োজন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসেল মিয়া বলেন, এই জুয়া খেলা যেখানে হবে সেখান থেকে জুয়াড়িদের ধরে আনার জন্য থানা পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে এলাকার মানুষকেও সচেতন হতে হবে।